1












































































ShareThis Copy and Paste

সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

ময়মনসিংহের প্রতিটি নির্বাচনী এলাকাতেই দলীয়ভাবে অসংগঠিত অবস্থায় রয়েছে বিএনপি


ময়মনসিংহ সংবাদদাতা : ময়মনসিংহ-২-ফুলপুর-তারাকান্দা আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য শাহ শহীদ সারোয়ার বিরোধী দলের সাড়ে ৪ বছরে সক্রিয়ভাবে মাঠে ছিলেন না। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসতেই সাবেক এই সাংসদ হঠাৎ করেই মনোনয়নমুখী রাজনীতি শুরু করেছেন। আন্দোলন ভুলে শাহ শহীদ সারোয়ারের মতো দলীয় অন্য ক্যান্ডিডেটদেরও মনোনয়ন নিয়ে কাড়াকাড়িতে দলীয় পরিমণ্ডলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। দলটির মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের ভাষ্যমতে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে কি হবে না এ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। সচেতন মহলেও রয়েছে এ নিয়ে নানা জল্পনা। কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলে সরকারের ভিত কাঁপিয়ে তোলার পরিবর্তে জোরেশোরে নির্বাচনী গণসংযোগ সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না। সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ-১-হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া আসনে বিএনপি নিজেকে গোছাতে পারেনি। এখানে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়াতে পারেননি বিএনপি’র ৩ প্রভাবশালী নেতা আফজাল এইচ.খান, উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আজগর ও সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তারা ব্যস্ত নিজেদের নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে। ময়মনসিংহ-৩-গৌরীপুর আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে তীব্র বিরোধ থাকলেও বিএনপি দাঁড়াতে পারছে না এই আসনে। রাজনীতিক ও সাবেক জনপ্রিয় সাংসদ এ.এফ.এম.নজমুল হুদার শূন্যতায় বিএনপিতে গ্রুপিং-কোন্দল প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ আসন থেকেও স্থানীয় বিএনপি নেতা হাফেজ আজিজুলসহ কোনো কোনো নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী। গত সাড়ে ৪ বছরে একদিনের জন্যই মাঠে সোচ্চার না হলেও হঠাৎ করেই নিজেদের ব্যানার-ফেস্টুনে নির্বাচন করার ‘খায়েশ’ ব্যক্ত করেছেন— এমনই ক্ষুব্ধ মন্তব্য তৃণমূল নেতাকর্মীদের। ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র দ্বিধাবিভক্তির মূলে রয়েছে ময়মনসিংহ-৪-সদর আসন। সংগঠনের সভাপতি সাবেক জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী এ.কে.এম.মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ দু’জনেই মনোনয়ন প্রত্যাশী। ব্যানার-ফেস্টুনের রাজনীতিতে অবশ্য এগিয়ে আছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী। দলীয় নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সব সময়ই দলের চেয়ে মনোনয়ন রাজনীতিকে গুরুত্ব দিতে পটু সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী। এ কারণে দল সুসংগঠিত হচ্ছে না বলেও মন্তব্য তাদের। মুক্তাগাছায় বিএনপি ভুগছে নেতার সঙ্কটে। গত সংসদ নির্বাচনে ভোট রাজনীতির মাঠে ‘অপরিপক্ক’ ছোট ভাই জাকির হোসেন বাবলু ওরফে ক্লাসিক বাবলু ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন রাজনীতিতে নতুন মুখ কাজী খালিদ বাবু’র কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। এ অবস্থায় দলটির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা সাবেক প্রতিমন্ত্রীকে ফের এ আসনে মনোনয়ন দেবার জোর দাবি তুলেছেন। ময়মনসিংহ-৬-ফুলবাড়িয়া আসনের সর্বত্রই নব্য রাজনীতিক আখতারুল আলম ফারুকের নির্বাচনী প্রচারণা চোখে পড়ে। আগে কখনো রাজনীতিতে ছিলেন না, অথচ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি ব্যানার-ফেস্টুনের ব্যাপক প্রচারণা শুরু করেছেন। আন্দোলনের মাঠে তাকে কখনোই দেখা যায়নি, এমন অভিযোগ দলটির নেতা-কর্মীদের। ময়মনসিংহ-৮-ঈশ্বরগঞ্জ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহ নুরুল কবির শাহীন হঠাৎ নির্বাচনমুখী রাজনীতি শুরু করেছেন। ঘটা করে ক্ষমতাসীন দলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েও ঈশ্বরগঞ্জে এ পর্যন্ত একটি কর্মসূচিও পালন করতে পারেননি তিনি। কিন্তু নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় তার ‘এলাকাপ্রীতি’ অনেকের মাঝেই নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ময়মনসিংহ-১১-ভালুকা আসনে বিএনপিতে মনোনয়ন চাইছেন এক নতুন মুখ। কথিত আছে, মোর্শেদ আলম নামের এ প্রার্থী ‘টাকার কুমির’। ইতোমধ্যেই ভাগিয়ে নিয়েছেন ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ, আর সেটা নেহায়েতই টাকার জোরে বলে মনে করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীরা। সবমিলে ময়মনসিংহের প্রতিটি নির্বাচনী এলাকাতেই দলীয়ভাবে অসংগঠিত অবস্থায় রয়েছে বিএনপি। তত্ত্বাবধায়কসহ নানা কেন্দ্রীয় ইস্যুতে উল্লেখযোগ্য কোনো তৎপরতা না দেখিয়ে এখন নির্বাচনী প্রার্থী হিসেবে নিজেদের প্রচার প্রচারণায় নেমে পড়েছেন দলটির অধিকাংশ নেতা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন